২২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের ক্রাইম ডেক্স:: দীর্ঘ আট মাস পর বরিশাল নগরীতে দিন দুপুরে জুয়েলারির দোকান থেকে সোনা চুরির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বরিশাল, ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় টানা ৯ দিন অভিযান চালিয়ে চুরির সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। এবং চুরি যাওয়া সোনার আংশিক উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় বরিশাল, ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম থেকে চোরচক্রের সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলো— সুমন- অলি, জামাল, আলাউদ্দিন, হাসান, নয়ন ও জসিম ওরফে জনি। এছাড়া চোরাই সোনা কেনার অভিযোগে চট্টগ্রামের বউ বাজার এলাকার স্বর্ণা জুয়েলার্সের পবন রায় ও শিফা জুয়েলার্সের মালিক আলম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রাসেল জানান, গত ২০ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম কাটপট্টি এলাকায় আশরাফ অ্যান্ড সন্স জুয়েলারি বন্ধ করে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় যান মালিক বাচ্চু মিয়া। তাকে অনুসরণ করে সংঘবদ্ধ চক্র ব্যস্ততম রাস্তার পাশে লুঙ্গি এবং বিছানার চাদর মেলে শাটার ও কলাপসিবল গেটের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে ১২৬ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।
ওই দিনই জুয়েলারি মালিক অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে ওই জুয়েলারির সামনে এবং ভেতরে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের চিহ্নিত করে। তবে এদের মধ্যে একজন ছাড়া অন্যরা বরিশালের বাইরের বাসিন্দা হওয়ায় তাদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে তেমন অগ্রগতি হচ্ছিল না। এ অবস্থায় বরিশালের সুমন নামে এক সন্দেহভাজন যুবককে আটক করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুরো ঘটনা বের হয়ে আসে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম এলাকায় টানা ৯ দিন অভিযান চালিয়ে চক্রের আরও ৬ সদস্য এবং চোরাই মাল কেনার অপরাধে চট্টগ্রামের দুই জুয়েলারি মালিককে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ১১টি আংটি এবং একটি নেকলেস উদ্ধার করে পুলিশ।
জুয়েলারি মালিক বাচ্চু চুরি যাওয়া সব স্বর্ণালংকার উদ্ধারসহ চক্রের অন্য সদস্যদেরও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
পাশের জুয়েলারি মালিক অমল কর্মকার বলেন, চোরচক্র এতটাই দুর্র্ধষ যে ওইদিন চুরির সময় মাত্র দেড় হাত দূরে থেকেও চুরির ঘটনা ধরতে পারিনি। তার ভাষ্য, এই চক্রকে সমূলে গ্রেফতার করতে না পারলে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারবেন না তারা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, দেরিতে হলেও সোনা চুরির রহস্য উদঘাটন এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা গেছে। এক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে বলে দাবি করেন তিনি। এজন্য নগরী নিরাপদ রাখতে বেশি বেশি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন পুলিশ কমিশনার।’